23 C
Dhaka
৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
টেকসিঁড়ি

ক্লাউড কম্পিউটিং-এর ৫-৪-৩ নীতির যাদু

রাকিব একজন উদ্যোক্তা যিনি একটি স্টার্টআপ তৈরি করেছেন এবং তার একটি বড় স্বপ্ন আছে। তার লক্ষ্য হলো এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা যা ব্যবহারকারীরা সহজে ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু সমস্যা হলো, তার কাছে নিজস্ব সার্ভার কেনার মতো বাজেট নেই এবং সার্ভার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাও নেই। তখন সে জানতে পারে ক্লাউড কম্পিউটিং-এর কথা, যেখানে সার্ভার কেনা বা পরিচালনা করার চিন্তা করতে হয় না। তাই ক্লাউড কম্পিউটিং-এর সুবিধা নিয়ে সে তার অ্যাপ্লিকেশন তৈরি ও চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।

৫টি বৈশিষ্ট্য

ক্লাউড কম্পিউটিং-এর ব্যবহার শুরু করতেই রাকিব পাঁচটি মজার সুবিধা পায় যা তার জীবন অনেক সহজ করে দেয়। প্রথমত, সে যখনই চায়, তখনই নিজের অ্যাপ্লিকেশনের জন্য নতুন সার্ভার বা স্টোরেজ যোগ করতে পারে, ঠিক যেমন একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করে। এই সুবিধাকে বলে অন-ডিমান্ড সেলফ-সার্ভিস।

এরপর, সে বুঝতে পারে যে ক্লাউডের মাধ্যমে যেকোনো ডিভাইস থেকে, যেকোনো জায়গা থেকে সে তার অ্যাপ্লিকেশনের সার্ভার অ্যাক্সেস করতে পারে। এই সুবিধাকে বলে ব্রড নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস।

তৃতীয়ত, রাকিব দেখে যে, ক্লাউড প্রোভাইডার (যেমন, AWS বা Google Cloud) তার মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বিশাল সার্ভার ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করেছে। একই রিসোর্সে অনেকের সাথে শেয়ার করে, কিন্তু প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা অংশ তৈরি করে দেয়, এটি রিসোর্স পুলিং নামে পরিচিত।

পরবর্তীতে, যখন তার অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহারকারী সংখ্যা বাড়তে থাকে, তখন সে খুব সহজেই তার রিসোর্স বাড়াতে বা কমাতে পারে, যা তাকে খরচ এবং ক্ষমতার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়। একে বলে র‍্যাপিড ইলাস্টিসিটি।

সবশেষে, রাকিব খেয়াল করে, সে ঠিক যতটুকু ব্যবহার করছে, তার বিলও ঠিক ততটুকুই আসছে। এভাবে সে তার বাজেট নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এটি মেজারড সার্ভিস নামে পরিচিত।

৪টি ডেপ্লয়মেন্ট মডেল

ক্লাউড ডেপ্লয়মেন্ট মডেল সম্পর্কে জানতে গিয়ে রাকিব বুঝতে পারে যে ক্লাউড অনেক ধরনের হতে পারে। প্রথমে সে পাবলিক ক্লাউড ব্যবহার শুরু করে, যেখানে গুগল বা অ্যামাজনের মতো কোম্পানি সার্ভার পরিচালনা করে, আর বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শেয়ার করে এটি ব্যবহার করতে পারে।

কিছুদিন পর, রাকিব তার অ্যাপ্লিকেশনের সংবেদনশীল ডেটার জন্য একটু নিরাপত্তা চায় এবং সে প্রাইভেট ক্লাউড-এ চলে যায়। এটি সম্পূর্ণরূপে তার প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি এবং তার প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ এটি ব্যবহার করতে পারে না।

পরবর্তীতে, রাকিব কয়েকটি কোম্পানির সাথে একসাথে কাজ করার জন্য একটি কমিউনিটি ক্লাউড তৈরি করে, যেখানে একই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রয়োজনীয় রিসোর্সগুলো শেয়ার করতে পারে।

অবশেষে, রাকিব বুঝতে পারে যে, তার প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চভাবে লাভবান করতে হলে পাবলিক ও প্রাইভেট ক্লাউড দুটোর মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে। তখন সে হাইব্রিড ক্লাউড-এ চলে আসে, যেখানে সে পাবলিক এবং প্রাইভেট ক্লাউডের সুবিধাগুলো একসাথে পায়।

৩টি সার্ভিস মডেল

ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে, রাকিবের তিনটি ধরণের সার্ভিসের প্রয়োজন হয়, যা তাকে তার অ্যাপ্লিকেশন পরিচালনা করতে অনেক সাহায্য করে। প্রথমে, সে SaaS (Software as a Service) ব্যবহার করে, যেখানে সরাসরি ইমেইল, ডকুমেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য সফটওয়্যার পায় এবং সেগুলো ব্যবহারের জন্য কোন ইনস্টলেশন বা রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, Gmail এবং Dropbox তার SaaS ব্যবহারের উদাহরণ।

এরপর, তার অ্যাপ্লিকেশন তৈরি এবং ডেপ্লয়মেন্টের জন্য সে PaaS (Platform as a Service) ব্যবহার করে। এটি তাকে ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে, যেখানে তাকে শুধু কোড লেখার ওপর মনোযোগ দিতে হয়, সার্ভার এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

সবশেষে, যখন তার অ্যাপ্লিকেশনটি আরও বড় হয়, তখন সে IaaS (Infrastructure as a Service) ব্যবহার শুরু করে, যা তাকে ভার্চুয়াল মেশিন এবং স্টোরেজ ব্যবহারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়। এটি দিয়ে সে তার সার্ভারের কনফিগারেশন সম্পূর্ণ নিজেই পরিচালনা করতে পারে।

এইভাবে, ক্লাউড কম্পিউটিং-এর ৫-৪-৩ প্রিন্সিপল রাকিবকে তার স্টার্টআপে সহায়তা করে, যা তাকে সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে এবং দ্রুত তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে।

Writer: Md Sajedul Islam (Cloud Engineer)

Related posts

২০২৪ সালে ভূমিকম্পের যে সব অ্যাপ সেরা

Tahmina

জিরো ডে অ্যাটাক: সাইবার নিরাপত্তার অদৃশ্য হুমকি

TechShiri Admin

ভিপিএন ব্যবহার করা কতটা নিরাপদ ?

TechShiri Admin

Leave a Comment