টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেছেন, “বাংলাদেশের ভৌগোলিক এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনন্য। কিন্তু আমাদের দেশ জলবায়ু পরিবর্তন, দ্রুত নগরায়ন এবং পরিবেশগত ঝুঁকির মুখোমুখি। তাই, টেকসই স্থাপত্য চর্চার প্রয়োজনীয়তা এখন অত্যন্ত জরুরি। স্থাপত্যের শুধু কাঠামোগত স্থায়িত্ব নয় বরং জ্বালানি দক্ষতা, অন্তর্ভুক্তি, সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং পরিবেশগত সামঞ্জস্যতা এসব বিষয়কে আমাদের স্থাপত্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। টেকসই স্থাপত্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ঝুঁকি কমাতে হবে।
চুয়েট-এর এই সম্মেলন একাডেমিক, পেশাজীবী এবং শিক্ষার্থীদের একত্রিত করেছে যেখানে বাংলাদেশের টেকসই ও স্থিতিস্থাপক স্থাপত্যের রূপরেখা অর্জনের ও স্থাপত্যে স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করা হবে এবং জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং করার মাধ্যমে নতুন সম্পর্ক তৈরির সুযোগ পাবেন।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর স্থাপত্য বিভাগের আয়োজনে “1st National Conference on Resilient Architecture Towards Sustainable Bangladesh (NCRATSB-2024)” শীর্ষক দিনব্যাপী জাতীয় কনফারেন্সে অনলাইনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৮ই ডিসেম্বর (বুধবার) ২০২৪ সকাল ১০ টায় চুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া মহোদয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স কনভেনার ও স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সজল চৌধুরী। অনুষ্ঠানে কো-কনভেনার ছিলেন স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিজওয়ানা ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন স্থাপত্য বিভাগের প্রভাষক সাদিয়া ইবনাত রাইছা।
গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেছেন, “পরিবেশের কোন ভৌগলিক সীমারেখা নেই এবং কোনো দেশই বিচ্ছিন্নভাবে নিজ পরিবেশ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটিয়ে এককভাবে নিজের ভবিষ্যতকে শঙ্কামুক্ত করতে পারে না। এজন্য টেকসই উন্নয়নের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। যে দেশের যে ধরনের সক্ষমতা রয়েছে সে দেশ সেভাবে নিজেদের ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সামষ্টিক উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে এগিয়ে আসবে। কাউকে পিছিয়ে রেখে অন্যরা এগিয়ে গেলে সেই উন্নয়ন জাতীয় ও বৈশ্বিকভাবে টেকসই হবে না।”
কনফারেন্সের কনভেনার ড. সজল চৌধুরী টেকসই স্থাপত্যের এই কনফারেন্সকে আগামীতে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে উন্নীত করার প্রয়াস ব্যক্ত করেন এবং উক্ত কনফারেন্সকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান।
স্থাপত্য বিভাগের ১ম জাতীয় কনফারেন্সে কী-নোট স্পিকার ছিলেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার সাব্বির আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ডিজাইন এর ডীন অধ্যাপক ড. আবু সায়েদ মোঃ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আখতার মাহমুদ ও ব্রাক এর ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রামের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব তাপস রঞ্জন চক্রবর্তী এবং আমন্ত্রিত কী-নোট স্পিকার হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আশিকুর রহমান জোয়ার্দার।
উল্লেখ্য, স্থাপত্য বিভাগের ১ম জাতীয় কনফারেন্সে চুয়েট, বুয়েট, রুয়েট, কুয়েট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাক ইউনিভার্সিটি, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় একাডেমিশিয়ান, স্কলার্স ও রিসার্চারগণ অংশ নেন। এতে ৪জন কী-নোট স্পিকার এবং ১জন আমন্ত্রিত স্পিকার ছিলেন। এই কনফারেন্সে মোট ১৫টি পেপার উপস্থাপিত হয়।
উক্ত কনফারেন্সের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলো বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। এতে স্পন্সর ছিলো নিপ্পন পেইন্ট ও কুশলা নির্মাতা লিমিটেড।