টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : সাম্প্রতিককালে একপে নিয়ে অনেকের আস্থাহীনতা কেটে গেছে। একপে হবে দেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত পেমেন্ট এগ্রিগ্রেটর।
আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, এই কথা বলেন। বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এটুআই সম্মেলন কক্ষে ‘এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই’ এর উদ্যোগে বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও একপে’র অংশীজনদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী ‘আর্থিক সেবায় পেমেন্ট ইকোসিস্টেম: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
একপে-এর মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নির্ভরযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, যা নাগরিকদের পছন্দ অনুযায়ী যেকোন পেমেন্ট চ্যানেলের মাধ্যমে সকল ধরনের ইউটিলিটি বিল, শিক্ষা ফি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফি পরিশোধের সুবিধা নিশ্চিত করবে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, বলেন, বাংলাদেশের পেমেন্ট ইকোসিস্টেমকে অধিকতর নাগরিকবান্ধব ও জনগণকে আর্থিক সেবার অর্ন্তভূক্তিকরণে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেমে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির যুক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। আর্থিক সেবাখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত এবং দেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগণকে আর্থিক সেবাভুক্তি’র আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে আইসিটি বিভাগ কর্তৃক ‘একপে’ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ন্যাশনাল পেমেন্ট এগ্রিগ্রেটর হিসেবে একপে’কে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একপে নিয়ে যেনো সঠিকভাবে প্রচার করা হয়, আমরা এখন চেষ্টা করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের পলিসি অ্যাডভাইজর ফয়েজ আহমেদ তায়েব বলেন, দেশের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সিস্টেম এর ক্ষেত্রে দেখা যায়, একই সিস্টেমে দুটো পৃথক এনটিটি হয়েও তারা ইন্টারঅপারেবিলিটি নিশ্চিত করতে পারছে না। আমরা এমন একটা ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চাই, যেখানে ইন্টারঅপারেবিলিটি নিশ্চিত হবে। এক্ষেত্রে দেশের সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য একটি নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট এগিগ্রেটর প্রয়োজন, যেখানে একপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। নিরাপদ ও সরকারি উদ্যোগ হিসেবে ‘একপে’কে নাগরিকবান্ধব গড়ে তুলতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে একপে প্ল্যাটফর্মকে এমন একটা অবস্থায় আইসিটি বিভাগ নিয়ে যেতে চায়, যেখানে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট ইউটিলিটি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেশের সকল ধরণের ব্যাংক, এমএফএস, ফিনটেক প্ল্যাটফর্ম’সহ সকল ধরণের আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো: মামুনুর রশীদ ভূঞাঁ বলেন, এটুআই কর্তৃক উদ্ভাবিত একপে মূলত বিভিন্ন ধরণের সেবার ফি ও বিল প্রদানের পদ্ধতি সহজ করছে। উদ্ভাবন হিসেবে যাত্রা শুরু করে স্বল্প সময়ে একপে-এর কার্যকারিতা দৃশ্যমান হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে একপে প্ল্যাটফর্মকে নিয়ে আস্থাহীনতার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, একপে’তে আস্থাহীনতার কোনো সুযোগ নেই। একপে নামের এই উদ্যোগটি এখন দেশের ন্যাশনাল পেমেন্ট এগ্রিগ্রেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়ে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
উক্ত কর্মশালায় ‘পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে একপে’র ভূমিকা ও করণীয়’ বিষয়ক একটি প্যানেল আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। এটুআই-এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মো. শাহাদাত হোসনের সঞ্চলনায় উক্ত প্যানেলের আলোচক হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্নসচিব মো. জাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগে অতিরিক্ত পরিচালক মো. রাশেদ এবং ইউএনসিডিএফ এর ক্যান্ট্রি প্রজেক্ট ম্যানেজার সাদাত মাইনুদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এই কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এটুআই-এর হেড অব প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট আবদুল্লাহ আল ফাহিম।
এছাড়া অনুষ্ঠানে পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, তিতাস গ্যাস, ঢাকা ওয়াসা, রাজশাহী ওয়াসা, ডেসকো, বিটিসিএল, ডিপিডিসি, জালালাবাদ গ্যাস’সহ দেশের সকল ধরণের পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি’সহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআই প্রোগ্রামের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে আর্থিক সেবাখাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং দেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগণকে আর্থিক সেবাভুক্তি’র আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি বিভাগ), বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ‘একপে’ প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করছে।