টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : অনলাইনে প্রতারণা আজ নতুন কোন ঘটনা নয় । দেশে দেশে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে আছে প্রতারকরা। প্রতারণার ঘটনায় যুক্ত হয়েছে দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ মাছ। ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখে গ্রাহকরা অর্ডার করেন। ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংকের টাকা অগ্রিম দিতে হয়। টাকা পাঠানোর পর ইলিশ না পেয়ে যোগাযোগের নম্বরে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে সকল প্রতারণা বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। শর্তসাপেক্ষে অনলাইন ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়েছে নিবন্ধন সনদ। প্রথম ধাপে ৭ উদ্যোক্তা অনলাইনে ইলিশ বিক্রির অনুমতি পেয়েছেন। শর্ত পূরণ না করায় বাদ পড়েছেন ৩৭ জন। গত ইলিশ মৌসুমের শুরুতে অনলাইন নিবন্ধন দিতে আবেদন গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ৮ শর্তে অনলাইন ইলিশ ব্যবসায়ীর হাতে নিবন্ধন সনদ তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। সনদের বিষয়ে তিনি বলেন, সনদপত্র পাওয়া কেউ যদি প্রতারণা করে, অভিযোগ পেলে তার সনদ বাতিল করা হবে। নতুন কেউ শর্তগুলো পূরণ করলে, তাদের নিবন্ধন দেওয়া হবে।
শর্ত প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, নিবন্ধন পেতে হলে তাকে অবশ্যই চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা হতে হবে। প্রয়োজনীয় আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হবে। উদ্যোক্তার নির্দিষ্ট একটি ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল অবশ্যই থাকতে হবে। ছবিতে চাঁদপুরের ইলিশের ছবি দেখালে অবশ্যই স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশই বিক্রেতাকে দিতে হবে। হাতিয়া, রামগতি, ভোলা, চট্টগ্রামের ইলিশ চাঁদপুরের ইলিশ বলে ছবি প্রদর্শন বা বিক্রি করা যাবে না।
নিবন্ধন পাওয়া ব্যবসায়ীদের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলগুলো হলো- ইলিশ ভাইয়া, মাছ পল্লী, টেকিং শপ, তাজা ইলিশ ডটকম, ইলিশ রানী, রূপালী বাজার এবং সজিব ইলিশের বাজার চাঁদপুর। এই ব্যবসায়ী দের সবার বাড়ি চাঁদপুরে।
প্রতারকদের কেউ চাঁদপুরের বাসিন্দা নয় বলে দাবি স্থানীয় পুলিশের। তারা জানান, কিছু অভিযোগ ট্র্যাক করে দেখা গেছে প্রতারকদের সবার ঠিকানা চাঁদপুরের বাইরে। অধিকাংশেরই বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কিছুই চাঁদপুরে নেই। তারা নিবন্ধিত ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তাও নয়। গত ৭-৮ মাসে কমপক্ষে ৫ শতাধিক ক্রেতা প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলেও জানায় পুলিশ।
স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম ও একাধিক ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশের ছবি-ভিডিও ব্যবহার করে অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একাধিক প্রতারক চক্র। গত কয়েক বছরে এসব চক্রের দৌরাত্ম বেড়েছে। কম দামে চাঁদপুরের ইলিশ ক্রেতার বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে অগ্রিম টাকা নেয় প্রতারকরা। টাকা হাতে পেয়েই লাপাত্তা হয়ে যায় তারা। দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতাদের পাশাপাশি বহু প্রবাসী গ্রাহকও এভাবে প্রতারিত হয়েছেন।