টেকসিঁড়ি ফিচারঃ কখনো ভেবেছেন, আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে ক্ষতিকারক অ্যাপ থেকে কীভাবে নিরাপদে রাখা যায়? শুধু গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ থাকা মানেই এটি শতভাগ নিরাপদ—এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি গুগল প্লে স্টোর থেকে ৭৭টি ক্ষতিকারক অ্যাপ অপসারণের ঘোষণা দিয়েছে, আর শুধু তাই নয়, গত এক বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ অ্যাপ সরিয়ে ফেলেছে, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১,০০০ অ্যাপ মুছে ফেলা হয়েছে।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে—আমরা কীভাবে নিজেদের ডিভাইসকে সুরক্ষিত রাখতে পারি? এর জন্য কিছু অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করুন:
— অ্যাপটির কাজের জন্য অনুমতিগুলো (permissions) কি যুক্তিসঙ্গত?
— নতুন আপডেটের পর হঠাৎ করে কেন অতিরিক্ত অনুমতি চাওয়া হচ্ছে?
— এসব পরিবর্তন কি সত্যিই প্রয়োজনীয়?
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস সুরক্ষিত রাখার গুরুত্বপূর্ণ উপায়সমূহ
১. রিভিউ ও রেটিং যাচাই করুন
অ্যাপ ইনস্টল করার আগে ব্যবহারকারীদের রিভিউ ও রেটিং ভালোভাবে দেখে নিন। প্রচুর নেতিবাচক রিভিউ বা অস্বাভাবিকভাবে কম রেটিং থাকা অ্যাপ ডাউনলোড না করাই ভালো।
২. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইনস্টল করুন
যে অ্যাপগুলো আপনি ব্যবহার করেন না, সেগুলো ফোন থেকে সরিয়ে ফেলুন। এতে শুধু স্টোরেজই খালি হবে না, ক্ষতিকারক অ্যাপ থেকেও ঝুঁকি কমবে।
৩. পারমিশন যাচাই করুন
অ্যাপ ইনস্টল বা ব্যবহারের সময় এটি কোন অনুমতি চাইছে খেয়াল করুন। যদি অপ্রয়োজনীয়ভাবে ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বা কন্টাক্টস অ্যাক্সেস চায়, তবে সেটি ইনস্টল না করাই ভালো।
৪. অজানা উৎস (Unknown Sources) বন্ধ রাখুন
ফোনের সেটিংসে গিয়ে “Unknown Sources” অপশনটি সবসময় বন্ধ রাখুন। এতে তৃতীয় পক্ষের অনিরাপদ অ্যাপ ইনস্টল হওয়া রোধ করা যায়।
৫. নিয়মিত আপডেট করুন
অপারেটিং সিস্টেম (OS) ও অন্যান্য অ্যাপ নিয়মিত আপডেট করুন। আপডেটে নিরাপত্তা ঘাটতি দূর হয়, ফলে হ্যাকারদের পক্ষে ডিভাইস আক্রান্ত করা কঠিন হয়ে যায়।
৬. সিকিউরিটি বা অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করুন
একটি নির্ভরযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো আপনার ফোনকে রিয়েল-টাইমে স্ক্যান করে ম্যালওয়্যার শনাক্ত করতে সহায়তা করে। ঠিক যেভাবে কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাস দরকার হয়, ফোনেও সেটি প্রযোজ্য।
৭. সবসময় প্লে স্টোর ব্যবহার করুন
যদিও প্লে স্টোরেও ক্ষতিকারক অ্যাপ থাকতে পারে, তারপরও তৃতীয় পক্ষের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোডের চেয়ে এটি নিরাপদ। গুগল অ্যাপ আপলোডের আগে কঠোর যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
সবশেষে নিশ্চিত করুন—আপনার ডিভাইস ও গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপগুলো (যেমন ব্যাংকিং, সিকিউরিটি অ্যাপ) সর্বশেষ আপডেটে চলছে কিনা। উপরের পদক্ষেপগুলো মেনে চললে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন অনেকটাই ক্ষতিকারক অ্যাপের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকবে।