31 C
Dhaka
১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১৩ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
টেকসিঁড়ি

এআই আইন হবে ফ্লেক্সিবল : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আইন ফ্লেক্সিবল হবে। যেহেতু প্রযুক্তি পরিবর্তনশীল সেভাবে আমাদের আপডেট থাকতে হবে। এআই পলিসি এবং আইন সমন্বয় করতে হবে।

বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কৃত্রিম ‍বুদ্ধিমত্তা আইন ২০২৪’ প্রণয়নের জন্য বহুপক্ষীয় অংশীজনের উপস্থিতিতে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে । সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারওয়ার ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ।

স্বাগত বক্তব্যে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এআই-কে উদ্ভাবন, অনুশাসন ও সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে’ । তিনি বলেন, আমরা এআই এর অসৎ ব্যবহার রোধ করতে চাই। ইথ্যিকাল চর্চার মাধ্যমে এআই দিয়ে স্বয়ংক্রিয় সেবার বহর বাড়াতে চাই। সে জন্য এরই মধ্যে আমরা এআই ব্যবহার করে কিছু ‍দিন হলো একটি কনস্টিটিউশন জিপিটি তৈরি করেছি। রেগুলেটরের মাধ্যমে আমরা সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবো।

প্রধান অতিথি আনিসুল হক বললেন, ‘সুবিধা কাজে লাগিয়ে অসুবিধা দূর করতে এই আইন করতে হচ্ছে। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অত্যন্ত প্রয়োজন। অংশীজনদের নিয়েই আমরা এই খসড়া চূড়ান্ত করবো। এআই আইন তৈরি করতে পলিসির সঙ্গে আইনের সমন্বয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে থাকবো। শিগগরিই একটি ড্রাফট আউট লাইন করবো। এরপর আবার অংশীজন সভা হবে। সেই ড্রাফ্টে মতামত কতটা অন্তর্ভূক্ত হলো তা দেখা যাবে।

অংশীজন সভায় নৈতিকতা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও জাতীয় মূল্যবোধে ভিত্তিতে ‘এআই আইন’ প্রণয়ণের পরামর্শ দেন বিটিআরসি মহাপরিচালক খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, এআই আমার কাছে ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’। তাই, নৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও জাতীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় নিয়ে এআই আইন করা দরকার।

মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুপ ফারুক বলেন, আমাদের শিল্পের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে এআই আইন করা উচিত হবে। বৈশ্বিক বিবেচনায় দায়িত্বশীল এআই জরুরী। ফান্ডামেন্টাল জেনারেল ইউজের ক্ষেত্রে সুযোগ রাখতে হবে। বৈশ্বিক যে ৬টি প্রিন্সিপাল রয়েছে সে বিষয়টি নিশ্চিত করে এই আই আইন করতে হবে। অষ্টম শ্রেণী থেকেই এআই অন্তর্ভূক্ত করা দরকার।

টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, এআই একটি কম্পোজিট বিষয়। তাই এই আইন অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইন বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা দরকার। বেশিরভাগ ডিপফেইক হয় করপোরেট লেভেলে। এক্ষেত্রে নির্দেশ দাতা না কোডার- দায় কার হবে প্রশ্ন রাখেন তিনি। তাই আইন করার আগে ইউজ কেইস ও অপরাধকে আগে চিহ্নিত করে এর অপপ্রয়োগ না হওয়ার বিষয়ে যুক্ত করেন তিনি ।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, আইন করার আগে এর দর্শনটা জরুরী। এআই এখন আস্ত একটা সফটওয়্যার বানিয়ে দেয়। ১০ জন সফটওয়্যারের ৩০ দিনের কাজ ৩ দিনে করে দেয় এআই। এটা আমাদের চিন্তার বিষয়। এআই এর অগ্রগতি দৌড়ের সঙ্গে আমরা কতটা এগিয়েছি তা ভাবতে হবে। তাই আশঙ্কা না সম্ভাবনা তা নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার। সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়েই তাই গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা নির্ণয় বন্ধ থাকার মতো এআই নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।

সভায় ‘এআই এর জন্য চাকরি হারানো ব্যক্তিদের জন্য সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান বিটিআরসি’র সাবেক মহাপরিচালক মোঃ রাকিবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘এআই এর কারণে যখন কেউ চাকরি হারাবে তখন পরবর্তী চাকরি না পাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারকে তাকে ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও ডেটা লিক হলে ব্যাড অ্যাক্টররা অ্যাক্টিভ হয়। তাই তথ্য সুরক্ষায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একইসঙ্গে বিদ্যমান আইনের সঙ্গে নতুন এআই আইন যেন সাংঘর্ষিক না হয় সে বিষয়টি এখনই নিশ্চিত করা দরকার।’

ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার বলেন, কৃ্ত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে শিক্ষার্থীরা। তাই এটা আমাদেরকে গ্রহণ করতেই হবে। একইসঙ্গে এর ঝুঁকিকে বিবেচনায় নিয়ে সেখানে আগাম ব্যবস্থা থাকতে হবে।

ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ড কমিশন সদস্য সুলতান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, এআই এর ইথিক্যাল ইস্যু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই ইউজিসি-তে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী বলেন, ওভার রেগুলেশন করতে গিয়ে যেনো আমরা এআই এর সুযোগ হাতছাড়া না করি। এটা কোনো দেশের সরকারের অধীনে নেই। এটা বিগ টেকের হাতে। তাই তাদের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব বাড়াতে হবে।

সভায় ২৬ জনের মতো সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতারা এআই আইন নিয়ে নিজেদের মত তুলে ধরেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিটি প্রযুক্তির গুড অ্যান্ড ব্যাড সাইড রয়েছে। তাই ভালোটি গ্রহণ করে খারাপটি মোকাবেলার সক্ষমতা আমাদের অর্জন করতে হবে। সময় এবং প্রয়োজনে যেনো দ্রুত আইনটি পরিবর্তন রাখা যায় সেই সুযোগ খসড়া আইনে রাখার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ইডিজি প্রকল্প পরিচালক আব্দুল বারী জানান, দুই মাসের মধ্যে এই আইনের খসড়া তৈরি করা হয়। এসময় দেশে-বিদেশের এআই অনুশাসন ও আইনের ওপর আলোকপাত করেন তিনি। জানালেন, এ বছরের মার্চে পাশ হয় ইইউ এআই আইন। এরই মধ্যে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ করেছে।

জুন-জুলাই মাসে ভারতে এআই আইন পাশ হতে পারে। বাংলাদেশের আইনে আমরা ডিজিটাল ডেটা, ডিপ ফেইক, বায়োমেট্রিক, নৃগোষ্ঠী ইত্যাদি বিষয় সংবিধানের আলোকে করা হচ্ছে। আইনে নাগরিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাও ওপর গুরুত্ব দিয়েছি।

আরও পড়ুন

দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আইন প্রণয়নের আউটলাইন তৈরি

ইউরোপ, আমেরিকার পলিসির আদলে আইন করবে বাংলাদেশ : পলক

Related posts

ফেসবুকে ভারতবিরোধী পোষ্টে লাইক, শিক্ষার্থীকে দেশে পাঠালো এনআইটি

Tahmina

বিডিইউ তে লোগো প্রতিযোগিতা, জমা দেয়ার শেষ তারিখ ২১ মার্চ

Tahmina

কর অব্যাহতির দাবীতে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর সাথে নবনির্বাচিত বেসিস কার্যনির্বাহী পরিষদের সাক্ষাৎ

Tahmina

Leave a Comment