টেক সিঁড়ি রিপোর্ট : বাংলা নববর্ষ আমাদের জীবনে নতুন মাত্রা দিয়েছে। যেটা আমাদের জাতীয় গণ্ডি পেরিয়ে এই নববর্ষের উদযাপনটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান করে নিতে যাচ্ছে বলে বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ।
প্রতিমন্ত্রী রবিবার কিশোরগঞ্জ মিঠামইনে বাংলালিংকের উদ্যোগে আয়োজিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্বের দীর্ঘতম “আলপনা” উপভোগকালে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ১৪ কি.মি দীর্ঘ আলপনার শেষ আঁচড় প্রদান করেন।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যর একটি মূল অংশ। আজকে বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা অঙ্কনের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখের সাথে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে বিশ্বের কাছে আরও সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারছি।
এই ১৪ কি.মি দীর্ঘ আলপনাটি করতে ৬৫০ এর বেশি শিল্পী গত কয়েকদিন ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি ১২ হাজার লিটারেরও বেশি রং ব্যবহার করে আঁকা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি নববর্ষের উৎসবটাকে বিশ্ব অঙ্গনে আলপনা আকার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে এবং এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা অসাম্প্রদায়িক ও প্রবৃদ্ধিশীল প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন আমাদের রাজনৈতিক মুক্তিকে নিশ্চিত করতে গেলে আমাদের প্রয়োজন অর্থনৈতিক মুক্তি। রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তি তখনই টেকসই হবে যখন আমরা সাংস্কৃতিক বিপ্লব সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারবো।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক মুক্তিকে টেকসই করার জন্য আমরা ৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের সাংস্কৃতি বিপ্লবের পথে আছি। নববর্ষের সর্বজনীন উদযাপনের মধ্য দিয়ে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও গোষ্ঠী নির্বিশেষে আমাদের একটি আনন্দের উৎসবে দিন হচ্ছে বাংলা নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ।
পলক বলেন, বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের মনোপলি ছিল। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম যখন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তখন তিনি মোবাইলের মনোপলি ভেঙে দেন। তিনি বলেন, সেই সময় বিএনপির একজন তৎকালীন নেতা সরকারের মন্ত্রীর একমাত্র মোবাইল টেলিফোন কোম্পানি ছিল, আর অন্য কোন লাইসেন্স বাংলাদেশের ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু মোবাইলের মনোপলি ভেঙ্গে দিয়ে বাংলাদেশে মোবাইলে বিপ্লব করেছেন।
টেলিকম সেক্টর অন্যতম একটি সফল প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বাংলালিংক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তারা একদিকে যেমন গ্রাম-গ্রামান্তরে ফোরজি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিয়েছে, অপরদিকে সরকারি সেবাগুলো দেওয়ার জন্য ভূমিকা রেখেছে। আজকে বাংলাদেশে ১৯ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহারকারী, ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী হাওরের মিঠামইন, অষ্টগ্রাম এবং ইটনা ঐতিহাসিক একটি অর্জন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, মহামান্য সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হাওরে বিস্ময়কর রাস্তা করে দিয়েছেন। যার ফলে আজকে হাওরবাসী যে রকম একটি আধুনিক সড়ক ব্যবস্থায় সংযুক্ত হয়েছে, অপরদিকে হাওর এলাকাটি একটা অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, হাওরে এই পর্যটন কেন্দ্রটি একসময় শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক বিদেশি পর্যটকদের পরিদর্শনের জন্য আকর্ষণ করবে।
এসময় কিশোরগঞ্জের স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।