29 C
Dhaka
১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১৩ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
টেকসিঁড়ি

তথ্যপ্রযুক্তিতে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা সম্প্রসারণে ‘বেসিস আমেরিকা ডেস্ক’ চালু

টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারকরণ, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা জোরদার করতে বেসিস আমেরিকা ডেস্ক গঠন করেছে। এ উপলক্ষে রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বেসিস আমেরিকা ডেস্কের উদ্বোধন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস।

অন্যান্যের মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের ইকোনোমিক অফিসার জেমস গার্ডিনার, ইক্যাব সভাপতি শমী কায়সারসহ উপস্থিত ছিলেন, বেসিসের সাবেক সভাপতিবৃন্দ, বেসিস কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বেসিস সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী সফটওয়্যার এবং তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য এবং পরিষেবাগুলির জন্য সবথেকে বড় রপ্তানি গন্তব্য, যা মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ২৭ শতাংশ। বেসিস-আমেরিকা ডেস্ক একটি নিবেদিত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে যা আমেরিকান কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে সর্বশেষ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রদর্শন, সেমিনার ও বি২বি এর মাধ্যমে তথ্য বিনিময়, প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এবং কর্মশালার আয়োজন করে বেসিস সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জ্ঞান বিনিময়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বেসিসের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। তিনি বলেন, “বেসিস আমেরিকা ডেস্কের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা এবং প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি বৃদ্ধিকরণ। পাশাপাশি, একটি স্মার্ট অর্থনীতি গড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে গ্লোবাল আইটি হাব হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা।”

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস উভয় দেশের জন্য এর পারস্পরিক সুবিধাগুলি তুলে ধরে এই উদ্যোগের প্রতি তার উচ্ছাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বেসিস আমেরিকা ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের একটি মাইলফলক। বদ্ধ বাজার থেকে উন্মুক্ত বাজার বেশি ভালো। পোশাক ও সফটওয়্যার রফতানির এআই এর দক্ষ ব্যবহার করতে পারে বাংলাদেশ। তবে এ জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন, বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তবে পাশ্ববর্তী দেশের চেয়ে কমমূল্যে তাদের চেয়ে ভালো সেবা দিতে হবে। এক্ষেত্রে এআই সল্যুশন দিয়ে তারা তাদের ব্যবসায় বাড়াতে পারে। আমি আশা করি বেসিস-আমেরিকা ডেস্ক যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি বাজারকে আরো সমৃদ্ধ করবে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে এই উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারকরণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা জোরদার করতে অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা রাখবে।”

বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বেসিস আমেরিকা ডেস্কের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং বেসিসের ভবিষ্যত সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধির বিকল্প নেই। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আগামীতে আইটি সেক্টর এই লক্ষ্যে পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বেসিস আমেরিকা ডেস্কের মাধ্যমে, আমরা আগামী ৫-৬ বছরে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের আইটি সেবা রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে এই খাত থেকে ৫ বিলিয়ন রপ্তানি আয় করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে, বেসিস আমেরিকা ডেস্ক বাংলাদেশী কোম্পানিগুলোকে মার্কিন বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বেসিস আমেরিকা ডেস্ক শুধু একটি প্ল্যাটফর্ম নয় বরং এর মাধ্যমে বেসিস সদস্যদের জন্য তথা বাংলাদেশী তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। এখন মানবসম্পদ উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান প্রয়োজন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বেসিস আমেরিকা ডেস্কের এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী আইটি হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে এক ভিডিও বার্তায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ” বেসিস আমেরিকা ডেস্কের যাত্রা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে শক্তিশালী করতে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে একটি পারস্পরিক ব্যবসায়িক শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হবে।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, “বেসিস আমেরিকা ডেস্ক বাংলাদেশী এবং আমেরিকান প্রযুক্তি কোম্পানিগুলির মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, আইওটি এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগুলিতে যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে উৎসাহিত করবে। বেসিসকে তার সদস্য কোম্পানিদের জন্য মেনটরশীপ নিতে হবে এবং পরিচর্যা করতে হবে যেন তারা তাদের ব্যবসা সঠিকভাবে করতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে রফতানি বাড়ানোর জন্য সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। সেবা রফতানি খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তাই মান দিয়েই টিকে থাকতে হবে। ”

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসিসের পরিচালক এম আসিফ রহমান। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এবং উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান।

Related posts

নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বাড়াতে এআই যুক্ত করবে হুয়াওয়ে

Tahmina

১ম আন্তর্জাতিক এআই অলিম্পিয়াডে ৪টি পদক অর্জন বাংলাদেশের

Tahmina

প্রসবকালে মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধে বাংলাদেশের ডাক্তার সায়েবার উদ্ভাবন

Tahmina

Leave a Comment