22 C
Dhaka
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
টেকসিঁড়ি

বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ডঃ অচিন ভৌমিক যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ ডিজিটাল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটিতে নিযুক্ত

টেক সিঁড়ি রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ ডিজিটাল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটিতে নিযুক্ত হলেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ডঃ অচিন ভৌমিক।

স্টার্কির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর নির্বাহী সহ-সভাপতি এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডজাঙ্কট প্রফেসর ড. অচিন ভৌমিক, পিএইচডি, যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ ডিজিটাল হেলথ অ্যাডভাইজরি কমিটির একজন প্রতিনিধিরূপে নিযুক্ত হয়েছেন। এই মর্যাদাপূর্ণ পদটি ড. ভৌমিকের অসাধারণ নেতৃত্ব ও ডিজিটাল হেলথ ক্ষেত্রে তার বিশেষ দক্ষতার স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে তার অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।

এফডিএর ডিজিটাল হেলথ অ্যাডভাইজরি কমিটি ডিজিটাল হেলথ সমাধানগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও বিকাশে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করে। ডঃ ভৌমিকের নির্বাচিত হওয়া স্টার্কির উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা সমাধান প্রাপ্তির একীকরণের কাজকে প্রাধান্য দেয়।

স্টার্কির প্রেসিডেন্ট এবং সিইও ব্র্যান্ডন সাওয়ালিচ ডঃ ভৌমিকের নিয়োগে বলেন, “মেডিকেল ডিভাইস শিল্পে অচিনের নেতৃত্ব তুলনাহীন। তার অবদান প্রযুক্তির ভবিষ্যত গঠনে সাহায্য করবে এবং আমাদের জীবনমান উন্নয়নকারী পণ্য তৈরির উদ্দেশ্যকে আরও সুসংহত করবে।”

ডঃ ভৌমিক উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “ডিজিটাল হেলথ সমাধানকে এগিয়ে নিতে এফডিএ-তে যোগ দিতে আমি গর্বিত। স্টার্কি সবসময়ই উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং রোগী-কেন্দ্রিক যত্নের একীকরণে অগ্রগামী থেকেছে, এবং আমি এই ক্ষেত্রে অবদান রাখতে উন্মুখ।”

বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার টিন্নান্দিনায় জন্মগ্রহণকারী ড. ভৌমিক রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন, তিনি সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৬ষ্ঠ স্থান অর্জন করেন।

এরপর তিনি ভারতীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইআইটি কানপুর থেকে পূর্ণ স্কলারশিপ নিয়ে ব্যাচেলর অফ টেকনোলজি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেন, যেখানে তিনি গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যানশিপ অর্জন করেন।

একাডেমিক সাফল্যের পর ডঃ ভৌমিক ইন্টেল কর্পোরেশনে গবেষণা বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন এবং ক্রমান্বয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। ইন্টেলে, তিনি পারসেপচুয়াল কম্পিউটিং গ্রুপের নেতৃত্ব দেন এবং ৩ডি সেন্সিং, কম্পিউটার ভিশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ভার্চুয়াল ও মিক্সড রিয়েলিটির মতো উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

২০১৭ সালে ডঃ ভৌমিক স্টার্কিতে যোগ দেন, যা একটি বেসরকারি মেডিকেল ডিভাইস প্রতিষ্ঠান, যেখানে ৫,০০০ এর বেশি কর্মচারী এবং ১০০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নির্বাহী সহ-সভাপতি হিসাবে, তিনি স্টার্কির প্রযুক্তি কৌশল, গবেষণা এবং পণ্য উন্নয়নের তত্ত্বাবধান করেন। তার দৃষ্টিভঙ্গি শ্রবণযন্ত্রগুলোকে উন্নত সেন্সর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সাথে একত্রিত করে স্বাস্থ্য ও যোগাযোগের বহুমুখী ডিভাইসে রূপান্তরিত করেছে, যা মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক।

ডঃ ভৌমিক স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডজাঙ্কট প্রফেসর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন, যেখানে তিনি গবেষণার তত্ত্বাবধান করেন এবং কগনিটিভ নিউরোসায়েন্স, পারসেপচুয়াল অগমেন্টেশন টেকনোলজিস এবং ইন্টেলিজেন্ট সিস্টেম নিয়ে লেকচার দেন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে এবং সিউলের কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে তার একাডেমিক সংযুক্তি আছে।

একাডেমিয়া ও শিল্পক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য তিনি বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) এর সম্মানিত ফেলো, সোসাইটি ফর ইনফরমেশন ডিসপ্লে (এসআইডি) এর ফেলো এবং টাইম ম্যাগাজিনের বেস্ট ইনভেনশনস পুরস্কার।

ডঃ ভৌমিক ২০০টিরও বেশি প্রকাশনা রচনা করেছেন, যার মধ্যে দুটি বই রয়েছে, এবং তার নামে ৩৮টি ইস্যু করা প্যাটেন্ট রয়েছে, যা তাকে ডিজিটাল হেলথ এবং পারসেপচুয়াল কম্পিউটিং-এর ক্ষেত্রে একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ন্যাশনাল ক্যাপশনিং ইনস্টিটিউট এবং ওপেনসিভির মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, ড. ভৌমিক প্রযুক্তিগত সম্প্রদায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন এবং পরবর্তী প্রজন্মের উদ্ভাবকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করার অঙ্গীকার তাকে মানবজীবনের উন্নয়নে ডিজাইন করা বুদ্ধিমান সিস্টেমগুলোর বিকাশে একটি চালিকা শক্তি হিসেবে গড়ে তুলেছে।

Related posts

মহাকাশচারী হবার চেয়ে বাবা হওয়াটাই বেশি চ্যালেঞ্জিং

Tahmina

পাসওয়ার্ড পলকের কাছে তাই বন্ধ আইসিটির ফেইসবুক,ইউটিউব!

Tahmina

অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ কোম্পানি এনভিডিয়া

Tahmina

Leave a Comment