টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : বাণিজ্যিকভাবে ৫জি সেবা চালু করলো রবি। রাজধানী ঢাকার শাহবাগ ও ফকিরাপুলসহ চট্টগ্রাম ও সিলেটের নির্বাচিত এলাকায় সীমিত পরিসরে এই সেবা চালু হয়েছে ।
হুয়াওয়ে ও এরিকসনের কারিগরি সহায়তায় চালু হওয়া এ সেবার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর রবির কর্পোরেট অফিসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী, কমিশনার মাহমুদ হাসান ও মহাপরিচালক আমিনুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবির চিফ কমার্সিয়াল অফিসার শিহাব আহমেদ ও কোম্পানি সচিব শাহেদুল আলম।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী বলেন, দেশে এখনো ৩৫ শতাংশ মানুষ ফিচার ফোন ব্যবহার করেন। তাই নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি চালুর পাশাপাশি গ্রামীণ জনগণ যাতে পিছিয়ে না পড়ে, সে বিষয়েও নজর দেওয়া জরুরি।
তিনি বলেন, ‘জি কোনো প্রযুক্তি নয়, এটি রিয়েল টাইম সল্যুশন। আমরা বিদ্যমান দুই লাখ কিলোমিটার ফাইবারকে পাঁচ লাখ কিলোমিটারে উন্নীত করতে কাজ করছি, যাতে দেশব্যাপী ৫জি বিস্তার সহজ হয়।’
রবির ভারপ্রাপ্ত সিইও এম. রিয়াজ রশিদ বলেন, সরকারের ভিশন ও নীতিগত সহায়তার কারণেই দ্রুততম সময়ে ৫জি চালু করা সম্ভব হয়েছে। আপাতত গ্রাহকেরা ফোরজির সমপরিমাণ খরচে ৫জি ব্যবহার করতে পারবেন। আগামী বছর নাগাদ চাহিদার ভিত্তিতে ৫০০ সাইটে এ সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে।
মূলত, বর্তমানে দেশে প্রায় ৬০ শতাংশ গ্রাহকের হাতে ফোরজি–সক্ষম হ্যান্ডসেট থাকলেও মাত্র ৭ শতাংশ মানুষের কাছে আছে ফাইভজি–সক্ষম হ্যান্ডসেট। বাজারে এর প্রকৃত ব্যবহারযোগ্যতা বা পেনিট্রেশন ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রবি ও হুয়াওয়ের যৌথ উদ্যোগে ৫জি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের ১২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক পরীক্ষামূলকভাবে ছয়টি স্থানে ৫জি সেবা চালু করে।
পরবর্তীতে ২০২২ সালে গ্রামীণফোন ঢাকাসহ চট্টগ্রামে পরীক্ষামূলক ব্যবহার এবং দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ট্রায়াল পরিচালনা করে। তবে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে এতদিন বাণিজ্যিক পর্যায়ে এই সেবা চালু হয়নি।
ভারত ২০২২ সালের ১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ৫জি সেবা চালু করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুতগতিতে ৫জি প্রযুক্তির প্রসার ঘটছে। এরিকসনের সর্বশেষ মোবিলিটি রিপোর্ট (২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিক) অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ৫জি গ্রাহকের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ২৪০ কোটির বেশি ছাড়িয়েছে এবং বছরের শেষ নাগাদ তা প্রায় ২৯০ কোটিতে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।