বর্তমানে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সাইবার সংঘাত কেবল ওই অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না—এটি আন্তর্জাতিক সাইবার অবকাঠামোর ওপরও সরাসরি প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে আঞ্চলিক DNS রুট, ক্লাউড হোস্টিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক (CDN)-এ আক্রমণের ফলে বাংলাদেশের মতো তৃতীয়পক্ষ নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলোর সিস্টেমও ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং নাগরিক পরিষেবাগুলোর একটি বড় অংশ এখন ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে ব্যাংকিং, বিদ্যুৎ বিতরণ (SCADA System), এয়ারলাইনস, ই-গভ সার্ভিস, এবং টেলিকম সেক্টর—এগুলো সরাসরি আন্তর্জাতিক ক্লাউড, ডোমেইন সিস্টেম এবং API-ভিত্তিক অপারেশন এর উপর নির্ভর করে।
যদি উপমহাদেশীয় বা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের সার্ভার রুট আক্রান্ত হয়, তাহলে DNS resolution failure, routing hijack, বা DDoS spillover এর মতো জটিল সমস্যায় বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এমতাবস্থায় BGD e-GOV CIRT, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (BCC), এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সিগুলোকে সমন্বিতভাবে Real-time Threat Intelligence Sharing, Red Team Assessment, এবং Critical Infrastructure Risk Mapping কার্যক্রম শুরু করা উচিত।
পাশাপাশি, ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক, বিদ্যুৎ SCADA, এয়ারলাইন সিস্টেম এবং ISP গেটওয়েগুলোতে লগ মনিটরিং, ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম (IDS), এবং DNS firewall সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ব এখন সাইবার দুনিয়ার যুদ্ধমঞ্চে। আমরা যদি এই পর্যায়ে প্রতিরোধমূলক প্রস্তুতি না নেই, তাহলে ভবিষ্যতের আক্রমণ কেবল আমাদের ভার্চুয়াল অবকাঠামো নয়—রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতাকেও দুর্বল করে তুলতে পারে।
লেখক ঃ তানভীর হাসান জোহা , সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল , সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক