টেকসিঁড়ি রিপোর্টঃ প্রযুক্তি জায়ান্ট মেটা (Meta) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ভার্চুয়াল অভিজ্ঞতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এআই ডেটা সেন্টার নির্মাণ করছে, যার আয়তন হবে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন শহরের প্রায় সমান। এই বিশাল স্থাপনাটি মেটাভার্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম জুড়ে পরবর্তী প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ভার্চুয়াল কার্যক্রমকে শক্তি যোগাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, তারা “মাল্টি-গিগাওয়াট ক্লাস্টার” তৈরি করছেন। এর মধ্যে “প্রমিথিউস” নামের প্রথম ডেটা সেন্টারটি ২০২৬ সালের মধ্যে চালু হবে এবং এটি ম্যানহাটনের একটি বিশাল অংশের সমান জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হবে। আরেকটি বিশাল প্রকল্প “হাইপেরিয়ন” লুইজিয়ানায় নির্মিত হচ্ছে, যা কয়েক বছরের মধ্যে ৫ গিগাওয়াট পর্যন্ত স্কেল করতে পারবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই মেগা ডেটা সেন্টারের মূল উদ্দেশ্য হলো এআই, অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR)/ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) এবং মেটাভার্স অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করা। এই ডেটা সেন্টারগুলোতে থাকবে অত্যাধুনিক এবং বিপুল সংখ্যক গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (GPU) ক্লাস্টার, যা অতি-উচ্চ গতির কম্পিউটিং ক্ষমতা নিশ্চিত করবে। ২০২৫ সালের মধ্যে মেটা ১.৩ মিলিয়ন গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (GPU) এবং ১ গিগাওয়াট কম্পিউটিং ক্ষমতা অনলাইনে আনার পরিকল্পনা করেছে।
এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর পরিবেশবান্ধব নকশা এবং স্থায়িত্বের উপর জোর। মেটা নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার, পানির সঠিক ব্যবহার এবং বর্জ্য কমানোর প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। ডেটা সেন্টারগুলোতে শক্তি দক্ষতা বাড়াতে এআই-চালিত কুলিং সিস্টেম এবং পরিবেশবান্ধব কংক্রিটের মতো উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এআই খাতে নিজেদের নেতৃত্ব বজায় রাখতে মেটার এটি একটি সাহসী এবং সুদূরপ্রসারী বিনিয়োগ। এই বিশাল অবকাঠামো নির্মাণ মেটাকে এআই মডেল প্রশিক্ষণ এবং মেটাভার্সের জটিল কম্পিউটেশনাল চাহিদা পূরণে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে। এটি প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর ভবিষ্যতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, কিছু বিশেষজ্ঞ এ ধরনের বৃহৎ ডেটা সেন্টারের বিপুল পরিমাণ পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারের সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।