টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : ১২ জুলাই, শনিবার , রাজধানীর হলিডে ইন হোটেলে “টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং লাইসেন্সিং অবকাঠামো” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, টেলিকম পলিসির উদ্দেশ্য হলো জেনারেশনাল ট্রান্সফরমেশন (প্রজন্মগত রূপান্তর) এবং আমরা এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি।
বিশেষ সহকারী আরও বলেন, পলিসিতে লাইসেন্সের সংখ্যা কতগুলো হবে তা নির্ভর করবে লাইসেন্স অবলিগেশন এন্ড কেপিআই পারফরমেন্সের উপর। তবে বিটিআরসি বেসরকারি গবেষণা সংস্থার মাধ্যমে জানতে পারে কি পরিমাণ লাইসেন্স লাগবে বা কি পরিমাণ লাইসেন্স থাকলে অপটিমাল হয়।
তবে এই লাইসেন্স সংখ্যার নাম করে নতুন বিনিয়োগকারীদের বাধা দেওয়া যাবে না। তাছাড়া টোল কালেক্টর হিসেবে যে লাইসেন্সগুলো বিগত সরকারের সময় দেয়া হয়েছিল সেগুলো কন্টিনিউ করা হবেনা। বিদেশি কোম্পানির দেশীয় প্রতিনিধিদের দেশের বৃহত্তম স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার আহ্বান জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান বাড়াতে হবে না হলে তারা গ্রাহক হারাবে। আমরা নেটওয়ার্ককে কানিকটিভিটি থেকে সার্ভিস ওরিয়েন্টেড করতে চাই পাশাপাশি লোয়ার ব্যান্ডের ফ্রিকোয়েন্সি অবমুক্ত করা এবং এক্সিটিং ইকোসিস্টেম কে রিফর্মের জন্য কাজ করছি ।
বিশেষ সহকারী জানান, নীতিমালাকে সমৃদ্ধ করতে যৌক্তিক পরামর্শগুলো বিবেচনা করা হবে। একইসাথে সরকারের ভালো উদ্যোগকেও স্বাগত জানানো উচিত বলেও তিনি মনে করেন । এক্সপ্রেক্ট্রাম প্রাইজকে রোলআউট কষ্ট হিসেবে পলিসিতে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, এর আগে এতো ডেমোক্রেটিক উপায়ে কোন পলিসি হয়নি। পলিসি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে সবার সাথে কথা বলেছি। নতুন লাইসেন্স নিয়ে যারা আসবে তারা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে কাজ করবে। লাইসেন্স লিমিটেড হবে না।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব: এমদাদ উল বারী বলেন, টেলিকম হচ্ছে রিয়েল টাইম সার্ভিস, এটা হুট করে পরিবর্তন করলে সমস্যা হবে তাই স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে সাসটেইনেবল পরিবর্তন করা হবে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের নিচে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। পলিসিতে মাইগ্রেশন প্ল্যান রয়েছে তাই লাইসেন্স বাতিল নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। কোন লাইসেন্স বাদ হচ্ছেনা, এ জন্য স্টেক হোল্ডারদের কোলাবরেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব ) জহিরুল ইসলাম বলেন, এই পলিসিতে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে।
ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির বলেন, দেশে টেলিকম রোড ম্যাপ দরকার।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, পলিসিতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করা দরকার।
বিশ্বব্যাংক পরামর্শক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের বর্তমান লিডারশিপ গত বিশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য। তারা একটি যুগোপযোগী পলিসি উপহার দিবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। এসওএফ ফান্ড ব্যবহার নিয়ে পলিসিতে ভালো সিন্ধান্ত আছে। কিছু লাইসেন্স ডিসকন্টিনিউ করা হচ্ছে তারপর কি হবে তা পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ জুলফিকার।
টিআরএনবির সভাপতি সমীর কুমার দে এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলালিংক এর সিইও, গ্রামীন ফোনের সিইও সহ টেলিকম সেক্টরের বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন।