টেকসিঁড়ি রিপোর্ট: বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে এমএফএস (মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস), ব্যাংক এবং পিএসপি (পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার) এর মধ্যে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (NPSB) মাধ্যমে আন্তঃলেনদেন সেবা চালু হবার কথা থাকলেও, তা পুরোপুরিভাবে সম্ভব হয়নি। দেশের শীর্ষ এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি ও অনুমোদনের অভাবে সেবাটি প্রাথমিক পর্যায়ে সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে।
বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সময় চাওয়া ও অনুমোদনের জটিলতা
আন্তঃলেনদেন চালুর ক্ষেত্রে বড় এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো সময় চেয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতা।
bKash: এই সেবা চালুর জন্য সবচেয়ে বড় এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ সময় চেয়েছে আরও তিন মাস। প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির অভাব এবং সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই এই বিলম্ব বলে জানা গেছে।
Upay: উপায় নামের আরেক এমএফএস প্রতিষ্ঠান সময় চেয়েছে মাত্র ১৫ দিন।
Rocket: ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এমএফএস সেবা রকেট জানিয়েছে, তারা টেস্টিং সম্পূর্ণ করেছে এবং গ্রাহক পর্যায়ে চালুর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে।
Nagad: সবচেয়ে বড় জটিলতা দেখা দিয়েছে নগদ-এর ক্ষেত্রে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, NPSB সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত হওয়ার অনুমোদন না পাওয়ায়, সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও তারা এই সেবা চালু করতে পারছে না।
নগদ’ বাদ পড়ার কারণ?
নগদ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, এখনও তাদের এমএফএস লাইসেন্স না থাকায় তাদের এই NPSB পরিষেবা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স না পাওয়ায় নগদ এই আন্তঃলেনদেন কার্যক্রমে আপাতত যোগ দিতে পারছে না।
কিছু ব্যাংকের শুরু ও এমটিবি’র (MTB) বিশেষ ঘোষণা
অন্যদিকে, কিছু ব্যাংক NPSB চ্যানেলের মাধ্যমে এমএফএস-এ অর্থ স্থানান্তর বা ট্রান্সফার সেবা শুরু করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (MTB): এমটিবি ঘোষণা দিয়েছে যে, আপাতত তাদের ব্যাংক থেকে সরাসরি অথবা NPSB চ্যানেলের মাধ্যমে যেকোনো এমএফএস ট্রান্সফার ফ্রিতেই করা যাবে। এটি গ্রাহকদের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা। তবে, পিএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, শীর্ষ এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে যুক্ত না থাকায় সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে নতুন এই সেবার গ্রহণযোগ্যতা কিছুটা সীমিত হতে পারে।
এই বিষয়ে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর পরবর্তী প্রস্তুতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপর নজর রাখা হচ্ছে। নতুন কোনো তথ্য জানতে চাইলে জানাতে পারেন।

