টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : ট্রাম্প প্রশাসনের একটি নতুন পদক্ষেপ বিশ্ব ড্রোন বাজার এবং বিশেষ করে আমেরিকান গ্রাহকদের জন্য একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (FCC) জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রে সকল প্রকার নতুন বিদেশী ড্রোন বিতরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
২২ ডিসেম্বর, সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া এই সিদ্ধান্তটি মূলত ড্রোন প্রযুক্তিতে মার্কিন আধিপত্য বিস্তার এবং বিদেশী ঝুঁকি কমানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণ
এফসিসি’র মতে, “অপরাধী, শত্রু বিদেশী শক্তি এবং সন্ত্রাসীরা” ড্রোন ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের মাতৃভূমিতে গুরুতর হুমকি তৈরি করতে পারে। তাই একে “জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংস্থাটি তাদের নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকা আপডেট করে এতে বিদেশে উৎপাদিত UAS (Unmanned Aircraft Systems) এবং এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
যারা ইতিমধ্যে পুরনো মডেলের বিদেশী ড্রোন কিনেছেন, তারা সেগুলো ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারবেন। নিষেধাজ্ঞাটি মূলত নতুন মডেল বিতরণের ওপর কার্যকর হবে।
এফসিসি চেয়ারম্যান ব্রেন্ডন কার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশনায় মার্কিন ড্রোন নির্মাতাদের সহায়তা করা হবে যাতে বিশ্ববাজারে আমেরিকার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই চীনা প্রযুক্তির ওপর কঠোর অবস্থান নিয়েছে। গত জুন মাসে পাস হওয়া একটি নির্বাহী আদেশের ধারাবাহিকতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, সরবরাহ শৃঙ্খলকে (Supply Chain) বিদেশী শোষণ বা নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত রাখা। বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে একটি শক্তিশালী দেশীয় ড্রোন শিল্প গড়ে তোলা।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিশ্বের শীর্ষ ড্রোন নির্মাতা চীনা প্রতিষ্ঠান ডিজেআই (DJI)। যদিও তারা আমেরিকান গ্রাহকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়, তবুও এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের নতুন কোনো মডেল বাজারে আসতে পারবে না।
তারা এই সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে। কোম্পানিটির দাবি, তারা কোন তথ্যের ভিত্তিতে এই নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে, তার কোনো স্বচ্ছতা নেই। তারা আরও জানিয়েছে যে, তাদের ড্রোনগুলো বাজারের সবচেয়ে নিরাপদ পণ্য এবং তারা একটি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক বাজার বজায় রাখার পক্ষে।


