টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : ২০২৯ সাল থেকে অস্কারের একচ্ছত্র সম্প্রচার স্বত্ব পেতে যাচ্ছে ইউটিউব। গত বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ‘অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস’ এই ঘোষণা দিয়েছে। অনুষ্ঠানটি ইউটিউবে বিশ্বব্যাপী ২০০ কোটিরও বেশি দর্শক বিনামূল্যে এবং সরাসরি দেখতে পারবেন।
গুগলের মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্মটি এবিসি (ABC)-সহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে এই স্বত্ব জিতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে ১৯৬১ সাল থেকে অস্কারের দীর্ঘদিনের সঙ্গী এবিসি-র সাথে অ্যাকাডেমির সম্পর্কের অবসান ঘটছে (মাঝখানে সত্তরের দশকের শুরুর দিকে অল্প কিছু সময় বাদে)।
ইউটিউবে প্রথম অনুষ্ঠানটি হবে ২০২৯ সালের ১০১তম অস্কার এবং এই চুক্তিটি ২০৩৩ সাল পর্যন্ত চলবে। তবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত এবিসি যথারীতি অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করবে। এই চুক্তির আর্থিক শর্তাবলী প্রকাশ করা হয়নি। ইউটিউবের সিইও নীল মোহন এক বিবৃতিতে বলেন, “গল্প বলা এবং শৈল্পিক উৎকর্ষকে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে অস্কার একটি অপরিহার্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। অস্কারের দীর্ঘ ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রেখে বিশ্বজুড়ে এই শিল্প ও বিনোদনের উদযাপন পৌঁছে দিতে অ্যাকাডেমির সাথে কাজ করাটা নতুন প্রজন্মের সৃজনশীল মানুষ এবং চলচ্চিত্র প্রেমীদের অনুপ্রাণিত করবে।”
টেলিভিশনের অন্যতম বড় এই আয়োজনের এই পরিবর্তনটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। এটি একই সাথে টেলিভিশনের দুনিয়ায় ইউটিউবের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য এবং লাইভ ইভেন্টের ক্ষেত্রে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি ঝুঁকে পড়ার বিষয়টিকে ফুটিয়ে তোলে।
এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ইউটিউব টিভি’ গ্রাহকরাও এটি দেখতে পাবেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৯৮ সালে অস্কারের দর্শক সংখ্যা যেখানে ৫ কোটি ৫০ লাখে পৌঁছেছিল, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা ২ কোটির কাছাকাছি নেমে এসেছে। দর্শক সংখ্যা কমে যাওয়ার এই প্রবণতাই অ্যাকাডেমিকে নতুন মাধ্যমে পৌঁছানোর পথ খুঁজতে বাধ্য করেছে।
অ্যাকাডেমির সিইও বিল ক্রেমার এবং প্রেসিডেন্ট লিনেট হাওয়েল টেলর এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “অস্কার এবং আমাদের বছরব্যাপী অনুষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ ঠিকানা হিসেবে ইউটিউবের সাথে এই বহুমুখী বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে যুক্ত হতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত। অ্যাকাডেমি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এই চুক্তির মাধ্যমে আমরা বিশ্বের বৃহত্তম দর্শকগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে পারব—যা আমাদের সদস্য এবং চলচ্চিত্র জগতের জন্য কল্যাণকর হবে।”
এই চুক্তির অংশ হিসেবে ইউটিউব কেবল মূল অনুষ্ঠানই নয়, বরং রেড কার্পেট, পর্দার পেছনের দৃশ্য, মনোনয়ন ঘোষণা, চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সাক্ষাৎকার, গভর্নরস বল, চলচ্চিত্র শিক্ষা বিষয়ক প্রোগ্রাম এবং পডকাস্টও প্রচার করবে।
যদিও এর আগে নেটফ্লিক্স ‘এসএজি (SAG) অ্যাওয়ার্ডস’-এর স্বত্ব কিনেছিল, তবে এই প্রথম বড় চারটি পুরস্কারের (এমি, গ্র্যামি, অস্কার এবং টনি) কোনো একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার টেলিভিশন ছেড়ে পুরোপুরি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে চলে যাচ্ছে।


