৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১৫ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
টেকসিঁড়ি

কাজীর গরু কেতাবে আছে,গোয়ালে নেই!

টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। সেই দশা চলছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি সেক্টরে । ২০১০ সাল থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও আশানুরূপ কোন অগ্রগতি নেই। উল্টো প্রতিটি ইনডেক্সে বাংলাদেশের স্কোর প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অনেক পেছনে। তাহলে এখন প্রশ্ন উঠেছে, এত বিনিয়োগ কোথায় হলো এবং এর ফলাফল কি হলো?

টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি খাতে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে, যার মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ নিয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এরপর‌ও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন এর আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স এর জুন, ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশ ১০০ মধ্যে ৬২ স্কোর করেছে এক্ষেত্রে মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম ও ভুটানের পরে বাংলাদেশের অবস্থান।

ওকলা স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স মে, ২০২৪ এর ইন্টারনেট গতির তালিকায় ১৪৭ দেশের মধ্যে ইন্টারনেট সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯ তম এক্ষেত্রে কেনিয়াও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে, পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সূচকেও বাংলাদেশ অবস্থান ১০৮, তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, রুয়ান্ডা, ঘানাও বাংলাদেশের উপরে।

আইএমএফ এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি সূচকে জুন, ২০২৪ এ ১৭৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৩ তম, তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, রুয়ান্ডা, ঘানাও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে।

সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সার্ফশার্ক ডিজিটাল কোয়ালিটি অব লাইফ ইনডেক্স ২০২৩ এর ডিজিটাল জীবনমান সূচকে বিশ্বের ১২১ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮২ তম এক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়েছে পাঁচ ধাপ। সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ৫% কম।

কি গভর্মেন্ট সূচকে বাংলাদেশ তালিকার ৭৩ এ যা বৈশ্বিক গড়মানের নিচে, ই সিকিউরিটি রেংকিংয়ে ৮৫ তম স্থানে এবং ইন্টারনেট ক্রয় ক্ষমতার হিসেবে ৭৭ তম অবস্থানে।

মার্কিন সাময়িকী সিইও ওয়ার্ল্ড এর এপ্রিল ২০২৪ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিংয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ সেখানে সেরা গন্তব্যের ৩০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৯ নম্বরে। তালিকায় ভারত, পাকিস্তানের পর বাংলাদেশের অবস্থান।

এই সকল সূচক দেখলে ঠিকভাবে প্রতিয়মান হয় ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ সুবিধা দেশের জনগণ পায়নি বরং এক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে । ২০১০ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এর ফল পায়নি দেশের মানুষ, এমনটা বলেছেন উপদেষ্টা মো নাহিদ ইসলাম ।

তিনি বলেন, প্রায় সব জায়গায় দেখা যায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হয় না, এক দু বার সময় বাড়ানোর পরে আবারও সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হয়। তাই এখন যে কয়েকটি প্রকল্পের সময় বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে তা যেন বুঝে শুনে বাড়ানো হয় ।

প্রকল্পগুলো ঠিক মতো শেষ করতে পারলে বাংলাদেশে ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ খাতে অনেক অগ্রগতি হবে যার সুফল দেশবাসী ভোগ করবে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।

তিনি প্রকল্পের ব্যয় কমানো, দীর্ঘসূত্রীতা পরিহার, সফটওয়্যারে সবসময় প্রকল্পের আপডেট দেওয়ার এবং সময়মতো প্রকল্প শেষ করার বিষয়েও মন্তব্য করেন।

২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সভাকক্ষে সচিব ডা.মো. মুশফিকুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আরও জানানো হয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের চারটি দপ্তরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৯টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে বিটিসিএল ৫টি, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড ১টি, ডাক অধিদপ্তর ২টি এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল পিএলসি ১টি প্রকল্প গ্রহণ করে।

সার্বিকভাবে প্রকল্প পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত জাতীয় অগ্রগতি ১.০২ শতাংশ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অগ্রগতি ৩.৮৪ শতাংশ।

সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের দপ্তর ও সংস্থার প্রধান এবং প্রকল্প পরিচালকরা নিজ নিজ প্রকল্পের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন।

Related posts

৭০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানার মুখে অ্যাপল, মেটা

Tahmina

অপরাধ দমনে সহায়তা করবে প্রতিরোধ ডট নেট

Tahmina

৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু করতে চান ড. ইউনুস

Tahmina

Leave a Comment