31 C
Dhaka
১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১৩ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
টেকসিঁড়ি

আইপি ভার্সন ৬ঃ ইন্টারনেট প্রটোকলের নতুন সংস্করণ (পর্ব -১)

আইপি ভার্সন ৬ হল ইন্টারনেট প্রটোকলের নতুন সংস্করণ বা পরবর্তী প্রজন্মের আইপি (IP) ষ্ট্যান্ডার্ড যার পুর্ণ নাম ইন্টারনেট প্রোটোকল ভার্সন ৬।

প্রতিটি কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, এবং অন্যান্য ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত যেকোনো ডিভাইসের একটি আইপি এড্রেস প্রয়োজন। বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট এর বিপুল ব্যবহারের কারণে আইপি ভার্সন ৪ এর অ্যাড্রেস স্কিম শেষ হয়ে যাচ্ছে। এড্রেসের হ্রাসের সমস্যা সমাধানের জন্য ইন্টারনেট প্রোটকলের সর্বশেষ ভার্সন IPv6 কাজ করছে ইন্টারনেট ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্ক ফোর্স (IETF)। IETF ১৯৯৮ সালে পরবর্তী প্রজন্মের ইন্টারনেট প্রোটোকল তৈরির জন্য একটি ষ্ট্যান্ডার্ড তৈরী করেছে যা ২০১৭ সালের ১৪ই জুলাই বিশ্বব্যাপি ইন্টারনেট এর মান হিসেবে অনুমদন লাভ করে।

বর্তমানে বিভিন্ন সফটওয়ার কোম্পানি গুলো তাদের অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করে IPv6 সমর্থন করে। ১৯৯৭ সালে IBM প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে তাদের AIX 4.3 অপারেটিং সিস্টেমে IPV6 ব্যাবহার করে। মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর আধুনিক সংস্করণগুলো, উইন্ডোজ ভিস্তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই IPV6 সমর্থন বা support করে।

আই পি ভার্সন ৬ কেন প্রয়োজন ?

IPv6 হল ইন্টারনেট প্রোটোকলের ৬ষ্ঠতম সংস্করণ এবং এটি ইন্টারনেট প্রোটোকলের (IP) সর্বশেষ সংস্করণও বটে। তবুও, আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে এটি প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছিল? এটি ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে চালু হয়েছিল! এটি তৈরির মূল লক্ষ্য হল পূর্ববর্তী প্রোটোকল IPv4 আর স্বল্পতার সমস্যা দূর করা এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিস্থাপন করা। ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ করতে চায় এমন ডিভাইসের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে যা IPv4 এর মাধ্যমে এই চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়।

ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৪ বা IPv4, যা বর্তমানে ৪.২ বিলিয়ন সতন্ত্র এড্রেস ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু নতুন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং বিভিন্ন নতুন ওয়্যারলেস এবং নেটওয়ার্ক-সংযুক্ত ডিভাইস, যেমন IoT ডিভাইসগুলির সাথে, এটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে ২০১০ সালের মধ্যে, ইন্টারনেট সমস্ত অনন্য IPv4 এড্রেসগুলো প্রায় শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে আইপি ভার্সন ৬ এর এড্রেস ক্যাপাসিটি ৩.৪ x ১০৩৮ যা ৩৪০ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন আইপি অ্যাড্রেসের সমান। কথিত আছে পৃথিবীর সকল পাথরখন্ডকে একটা করে আইপি এড্রেস দেয়া হলেও এর এড্রেস স্কীম শেষ হবে না।

আইপি ভার্সন ৬ এর সুবিধা

মোবাইল ফোন, নোটবুক এবং ওয়্যারলেস ডিভাইস এর ব্যাপক ব্যাবহার এর কারণে নতুন নতুন IP অ্যাড্রেস এর প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তুলছে। IPv6 এর একটি অন্যতম প্রধান সুবিধা হল বড় আকারের অ্যাড্রেস। IPV4 এর ৩২ বিট অ্যাড্রেস এর তুলনায় উল্লেখযোগ্য লাভ হল IPV6 এর ১২৮ বিট অ্যাড্রেস। IPV6, আইপি টেলিফোনি, ভিডিও অডিও, ইন্টারেক্টিভ গেম এবং ইকমার্সের মত ইন্টারনেট এবং অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন এর জন্য উন্নত মানের সেবা প্রদান করে।  আইপিভি ভার্সন ৬ একটি বৃহত্তর অ্যাড্রেসিং স্পেস ছাড়াও অনেক সুবিধা রয়ে যেমন ইন্টারনেট জুড়ে রুট অ্যাগ্রিগেশন সহজতর, ডিভাইস গতিশীলতা, নিরাপত্তা বৃদ্বি করা ইত্যাদি।

Ipv6 অ্যাড্রেসের গঠনঃ

আমরা জানি যে আইপি ভার্সন ৬ এর এড্রেস সাইজ হচ্ছে ১২৮ বিট। এই মধ্যে প্রথম ৪৮ বিট কে বলা হয় গ্লোবাল রাউটিং প্রিফিস, পরবর্তী ১৬ বিট হচ্ছে সাবনেট আইডি অথবা সাইট লেভেল আগ্রিগেটর আর সর্বশেষ অংশ হলো ইন্টারফেস আইডি।

গ্লোবাল রাউটিং প্রিফিক্স: গ্লোবাল রাউটিং প্রিফিক্স হলো সার্ভিস প্রোভাইডার কর্তৃক প্রদেয় নেটওয়ার্ক প্রিফিক্স যা কাষ্টমার/গ্রাহকের সাইটের জন্য বরাদ্ব দেয়া হয়।

সাবনেট আইডি: সাবনেট আইডি হল গ্রাহক সাইটের মধ্যে সাবনেট বরাদ্দ করার জন্য একটি পৃথক অংশ। IPv4 এর মতো, সাবনেট তৈরি করতে ইন্টারফেস আইডি (হোস্ট অংশ) থেকে বিট ধার করার প্রয়োজন নেই। সাবনেট আইডিতে বিটের সংখ্যা যেখানে গ্লোবাল রাউটিং প্রিফিক্স শেষ হয় এবং যেখানে ইন্টারফেস আইডি শুরু হয় তার মধ্যে পড়ে। এটি সাবনেটকে সহজ এবং পরিচালনাযোগ্য করে তোলে।

ইন্টারফেস আইডি: ইন্টারফেস আইডি একটি ৬৪ বিটের এড্রেস স্পেস যা একটি IPv4 এড্রেসের হোস্ট অংশের মতো ব্যবহৃত হয়।

লেখকঃ সামিউল হক সুমন, নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি – বাংলাদেশ

Related posts

ফায়ারওয়ালের রকমফের (পর্ব – ১)

TechShiri Admin

ক্রিপ্টোগ্রাফি কি ? এটি কিভাবে কাজ করে?

TechShiri Admin

সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার ( SOC) কি এবং কেন প্রয়োজন (পর্ব – ১)

TechShiri Admin

Leave a Comment