টেকসিঁড়ি রিপোর্ট: ভারত সরকারের অনুরোধে দেশটির অভ্যন্তরে ৬টি বাংলাদেশী বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ইউটিউব সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ডিসমিসল্যাব নামে একটি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা এই খবর জানিয়েছে। চ্যানেলগুলো হলো – যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন, সময়, ডিবিসি এবং মোহনা টিভি।
ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার (৯ মে, ২০২৫) থেকে এই চ্যানেলগুলো ভারতে ইউটিউবে আর দেখা যাচ্ছে না। ভারতে অবস্থিত ব্যবহারকারীরা এই চ্যানেলগুলোর ইউটিউব লিংকে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে একটি বার্তায় বলা হচ্ছে, “জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সরকারি আদেশের কারণে কনটেন্টটি এই দেশে ব্যবহারযোগ্য নয়।”
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তারা নয়াদিল্লি ও কলকাতাভিত্তিক দুজন সাংবাদিকের মাধ্যমে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করেছে। ঐ সাংবাদিকরাও নিশ্চিত করেছেন যে চ্যানেল গুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।
যমুনা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ ডিসমিসল্যাবকে জানিয়েছে যে, ইউটিউবের কাছ থেকে তারা একটি আনুষ্ঠানিক বার্তা পেয়েছে যেখানে ভারত সরকারের অনুরোধে তাদের কনটেন্ট ভারতে ব্লক করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ডিসমিসল্যাবের তথ্যমতে, এই চ্যানেলগুলো ভারতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শকের কাছে জনপ্রিয় ছিল।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো যখন ভারত সরকার জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। সম্প্রতি টুইটার (বর্তমানে এক্স) এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বেশ কিছু অ্যাকাউন্টও ভারতে ব্লক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ইউটিউবের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে। যদি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না পাওয়া যায়, তাহলে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যেই ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। এসব চ্যানেল বৈধভাবে সম্প্রচার করে আসছে এবং কোনো ধরনের ভুয়া তথ্য বা উসকানিমূলক কনটেন্ট (আধেয়) প্রচারের প্রবণতা নেই।
ফয়েজ আহমদ আরও বলেন, ইউটিউব যদি বন্ধের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে না পারে তাহলে ধরে নিতে হবে এটা ভারতের রাজনৈতিক পদক্ষেপ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশও একই পদক্ষেপ নেবে। কারণ বাংলাদেশ এসবের মধ্যে জড়াতে চায়নি।
বাংলাদেশের পদক্ষেপের বিষয়ে ফয়েজ আহমদ বলেন, রিপাবলিক বাংলাসহ ভারতের কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে আসছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ রয়েছে। তাই প্রয়োজনে এসব চ্যানেলের বিরুদ্ধেও বাংলাদেশও অনুরূপ ব্যবস্থা নেবে।