টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : জাহিদরা ৩ ভাই বোন ই মায়ের গুণ পেয়েছেন। মা যে কাজ ই করতেন সেটা সুন্দর ভাবে করতেন। জাহিদ সোহেল তাই যে কাজ ই করেন নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেন। নিজের সফলতার এই গোপন তথ্য জানালেন এআইইউবি থেকে পাশ করা বাংলাদেশের সন্তান বর্তমানে ডিজনি প্লাসের লিড সফটওয়্যার ইনঞ্জিনিয়ার জাহিদ সোহেল।
২০০২ সালে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (এআইইউবি) কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রেসিডেন্টস গোল্ডমেডেল পেয়ে স্নাতক করেন তিনি । তারপর ২০০৫ সাল পর্যন্ত সেখানে শিক্ষকতা, এরপর ফুল ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে সুইডেনের স্টকহোমের কেটিএইচ রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ডিস্ট্রিবিউটেড সিস্টেম নিয়ে মাস্টার্স করেন সোহেল। পড়াশোনা করতে করতেই চাকরি হয়ে যায় তাঁর। সুইডেনে প্রায় ১৭ বছর কিউলিক (ক্লিক নামেই পরিচিত), সনি মোবাইলফোনস, আইকিয়ার মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি।
মা বাবা ভাই বোনদের সঙ্গ চাইতেই স্ত্রী সন্তান নিয়ে পাড়ি জমান আমেরিকায়। সাত সাত বার ইন্টারভিউ দিতে হয়েছে ডিজনি প্লাসে বর্তমান পোস্টের জন্য । কি কি কাজ করতে হয় বর্তমান কর্মস্থলে এমন প্রশ্নের জবাবে জানালেন, ডিজনি প্লাস ব্যবহারকারীকে তাঁর উপযোগী কনটেন্ট সাজেস্ট করা, কোন কনটেন্ট তিনি বাফারিং ছাড়া দেখতে পারবেন, সেটি খুঁজে বের করা, ফ্রড চেকিং (যেমন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে যেন তিনটির বেশি ডিভাইস থেকে লগইন করা না হয়) নিশ্চিত করা, বিভিন্ন অ্যালগরিদমে ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া এই কাজগুলো করে তাঁর টিম।
মজার ব্যাপার হচ্ছে শুরুতে তিনি এআইইউবিতে ভর্তি হয়েছিলেন বিবিএতে। ওখানে এক বছর পড়ার পর মনে হলো, বিষয়টা তার জন্য নয়। সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) তুলনামূলকভাবে নতুন ছিল । সেখানে নতুন গবেষণা, উদ্ভাবনের সুযোগ আছে এই ভেবেই ভর্তি হয়ে গেলেন। এআইইউবির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান ডিন মশিউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলেন নি জাহিদ । এই স্যার ই তাকে টিএ (টিচিং অ্যাসিস্টেন্ট) হিসেবে সিলেক্ট করে ক্যারিয়ার শুরু করতে সাহায্য করেছিলেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন তিনি।
ছাত্র থাকা কালে ক্লাসমেট খালেদের সঙ্গে ‘স্মার্টহোম’ বানান। অফিস বা দূর থেকেই কীভাবে বাসার লাইট, ফ্যান, এসি, টেলিভিশন, চুলা বন্ধ (বা চালানো) যায়, এমন সফটওয়্যার তৈরি করেন। এখন এই প্রযুক্তি ঘরে ঘরে। তবে ২০০০ সালের দিকে এটা বড় ব্যাপার ছিল। ২০০২ সালে তিনি এআইইউবির ক্যাম্পাসগুলোতে যেন পিএবিএক্সের নেটওয়ার্ক ছাড়াই ইন্টারনেট-টেলিফোনের সাহায্যে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়, সে জন্য একটা সফটওয়্যার লেখার কাজ শুরু করেছিলাম। এ জন্য অ্যামাজন থেকে টেলিফোন এপিআইয়ের (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস) ওপর বই কিনে দিয়েছিলেন তাঁর ছাত্রের বাবা, সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খান। তবে কাজটা শেষ করতে পারিনি। কেননা তার আগেই আমার সুইডেনে স্কলারশিপ হয়ে গিয়েছিল। সিসকোর টেলিফোন পরে এক্সাক্টলি যেটা করেছে !