টেকসিঁড়ি রিপোর্টঃ দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন টেলিযোগাযোগ নীতি প্রণয়ন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা মোবাইল অপারেটরদের বিদেশি মালিকানা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ করেছে। এই নীতির ফলে বাংলালিংক এবং রবিকে তাদের শেয়ারের একটি অংশ স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের বা পুঁজিবাজারে বিক্রি করতে হবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, শতভাগ বিদেশি মালিকানাধীন বাংলালিংককে তার ১৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দিতে হবে, আর মালয়েশিয়ার আজিয়াটা গ্রুপের ৯০ শতাংশ মালিকানাধীন রবিকে ৫ শতাংশ শেয়ার অফলোড করতে হবে। রবির অবশিষ্ট ১০ শতাংশ শেয়ার ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে রয়েছে।
সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এই নীতিমালার মূল লক্ষ্য হলো একটি সরলীকৃত লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু করা, অবকাঠামো বিনিয়োগের দ্বার উন্মুক্ত করা এবং দেশের সব অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ বাধ্যতামূলক করা। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা উন্নত ও সাশ্রয়ী সেবা পাবে বলে সরকার আশাবাদী।
তবে, শিল্প বিশেষজ্ঞরা এই নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন এবং দেশীয় বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। কিছু শিল্প মহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে এই বাধ্যতামূলক শেয়ার অফলোডের শর্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করতে পারে।
নতুন নীতিমালার গেজেট প্রকাশের পর তা অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে। সরকার এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য একটি তিন ধাপের রোডম্যাপ তৈরি করেছে, যার অধীনে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে সকল অপারেটরকে নতুন কাঠামোর অধীনে আসতে হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নীতি দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য উদ্ভাবনের সুযোগ তৈরি করবে এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করবে। তবে, শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, নীতিটি যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত না হয়, তবে তা বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।