টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : ছোট ও আঞ্চলিক আইএসপিদের জন্য সুসংবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার (Access to Internet) কোনো বিলাসিতা নয়—এটি নাগরিক অধিকার। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা টিকে থাকলেই দেশের ডিজিটাল ইকোনমি টেকসইভাবে বৃদ্ধি পাবে।
শুক্রবার ,৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানান তিনি। তিনি আরও লেখেন,
“বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্ষুদ্র ও আঞ্চলিক আইএসপি (ISP) প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসা থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটি সংগঠিত প্রচেষ্টার ব্যাপার আমাদের নজরে এসেছে।
আমাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী:
ফলে ছোট আইএসপি-রা তাদের গ্রাহক হারাচ্ছে, এবং বড় কোম্পানিগুলো অন্যায্যভাবে বাজার দখল করছে।কিছু বড় আইএসপি বা গোষ্ঠী ছোট অপারেটরদের নেটওয়ার্কে নিয়মিতভাবে ডিডস (DDoS) আক্রমণ চালাচ্ছে, যার ফলে এসব আইএসপি ঘণ্টার পর ঘণ্টা নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে।এই আক্রমণগুলোর লোড কিছু ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে ৭০০ গিগা পর্যন্ত হয়, যা ছোট নেটওয়ার্কের পক্ষে সামাল দেওয়া প্রায় অসম্ভব।
উল্লেখ্য যে, ন্যাশনাল আইএসপি কোম্পানিগুলোর কেউ কেউ নতুন টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কিং ও লাইসেন্সিং এর ভুল ব্যাখ্যা করে ছোট আইএসপি গুলোর অস্তিত্ব থাকবে বা এমন ভয় দেখিয়ে একোয়ার করার চেষ্টা করছে, এই প্রক্রিয়াটিকে আমরা অপরাধ হিসেবে গণ্য করছি।
নতুন টেলিকম লাইসেন্স নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে, ছোট আইএসপিগুলো বর্তমানের অপারেটিং এরিয়ার পাশাপাশি পুরো জেলায় অপারেট করতে পারবে, অর্থাৎ আমরা তাদের কাজের ক্ষেত্রকে সম্প্রসারণের সুযোগ দিয়েছি। পাশাপাশি আইএসপি নবায়নের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল আইএসপি পর্যায়ে লাইসেন্স ফি কিছুটা বাড়িয়ে তা দিয়ে জেলা (উপজেলা সহ) পর্যায়ের লাইসেন্সকে কিছুটা কম্পেন্সেট করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি।
এ বিষয়ে আমাদের পদক্ষেপ:
আমরা আইএসপি-কে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SME) হিসেবে বিবেচনা করি, তাই তাদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি (BTRC) যৌথভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এই সাইবার অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। খুব দ্রুতই এ খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যাবে বলে আমরা আশাবাদী। একই সঙ্গে, যে কোনো বড় আইএসপি সিন্ডিকেট বা বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা রোধে মন্ত্রণালয়ের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
ছোট ও আঞ্চলিক আইএসপি-দের জন্য সুসংবাদ:
নতুন টেলিকম লাইসেন্স নীতিমালায় ছোট আইএসপি-রা এখন নিজেদের অপারেটিং এলাকা ছাড়াও পুরো জেলায় কার্যক্রম চালাতে পারবে। আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি যাতে জেলা পর্যায়ের লাইসেন্স ফি আরও যুক্তিসংগত করা যায় (দরকারে কিছুটা কমিয়ে)—যাতে প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তারা টিকে থাকতে পারেন। আমরা আইএসপি-কে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SME) হিসেবে বিবেচনা করি, তাই তাদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
লাইসেন্সিং ও মূল্যনীতি বিষয়ে অবস্থান:
বরং BTRC থেকে ANSP নির্দেশিকা (Guideline) আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পর আমরা সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে নীতিগত অবস্থান চূড়ান্ত করব।
আমাদের প্রতিশ্রুতি:
সম্প্রতি FTSP মূল্যনীতি ও নেটওয়ার্ক লাইসেন্সিং নিয়ে কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয় হিসেবে বিটিআরসি-কে সম্পূর্ণ সম্মান করি, তাই প্রস্তাবিত FTSP মূল্যনীতি বিষয়ে আমরা এখনই আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করব না। বরং BTRC থেকে ANSP নির্দেশিকা (Guideline) আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার পর আমরা সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে নীতিগত অবস্থান চূড়ান্ত করব।
আমাদের প্রতিশ্রুতি:
- বাজার থেকে ছোট আইএসপি-দের বের করে দেওয়ার যে কোনো অপচেষ্টা রুখে দেওয়া হবে।
- ডিডস আক্রমণকারীদের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
- একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য প্রতিযোগিতামূলক ইন্টারনেট ইকোসিস্টেম নিশ্চিত করা হবে।
আমরা বিশ্বাস করি, ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার (Access to Internet) কোনো বিলাসিতা নয়—এটি নাগরিক অধিকার। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা টিকে থাকলেই দেশের ডিজিটাল ইকোনমি টেকসইভাবে বৃদ্ধি পাবে।”

