32 C
Dhaka
৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ‎ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ১৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ‎ ‎ ‎‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ‎ ৫ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি
টেকসিঁড়ি

৩দিনব্যাপী পলিসি, রেগুলেশন ও সেবা সংক্রান্ত কর্মশালা চলছে

টেকসিঁড়ি রিপোর্ট : বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর আয়োজনে দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের (সাউথ এশিয়ান টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরস কাউন্সিল) অংশগ্রহণে ঢাকায় শুরু হয়েছে পলিসি, রেগুলেশন ও সেবা সংক্রান্ত তিনদিনব্যাপী কর্মশালা ।

২৮ – ৩০ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিটিআরসি ভবনে আয়োজিত কর্মশালায় আয়োজক বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ এবং ইরান এর টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রতিনিধিগণ, টেলিকম অপারেটর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের প্রায় ২০০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন।

এশিয়া প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটি) এর সহযোগী সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অংশগ্রহণ করেছে চায়নার হুওয়ায়ে (Huawei) টেকনোলজিস, অ্যামাজন ইন্ডিয়া, সিংগাপুরের ইন্টারনেট সোসাইটি এশিয়া লিমিটেড এবং বেলজিয়ামের কুলেন ইন্টারন্যাশনাল।

বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: এমদাদ উল বারী (অব.) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি’র মহাসচিব মাসানরি কুন্ড এবং পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথোরিটির সদস্য ও এসএটিআরসি ওয়ার্কশপ অন পলিসি, রেগুলেশন এন্ড সার্ভিসেস এর সভাপতি ড. খাওয়ার সিদ্দিক খোকার উপস্থিত ছিলেন।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি দেশই প্রায় একই ধরনের সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। টেলিকম শিল্পেও ব্যাপক পরিবর্তন আসছে এবংনিরাপত্তা ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের জন্য আমাদের মানসম্মত গ্রাহক সেবা ও ডিজিটাল সার্ভিস নিশ্চিতে কাজ করতে হবে, এক্ষত্রে পশ্চিমা বিশ্বের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার রেগুলেটরি চ্যলেঞ্জ সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, ডিজিটাল রূপান্তরে সবাইকে অন্তর্ভূক্ত করতে নানা চ্যালেঞ্জে রয়েছে। এসব বিষয় চিহ্নত করে আমাদের সুযোগ গুলো খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য সবাই মিলে একটি উত্তম নীতি প্রণয়নের বিকল্প নেই ।

এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটির মহাসচিব মাসানরি কুন্ডু বলেন, কর্মশালার উদ্দেশ্য হল সদস্যদেশসমূহের মধ্যে অন্তর্দৃষ্টি, অভিজ্ঞতা ও সর্বোত্তম অনুশীলন ভাগ করে নেওয়া । এর মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের মধ্যে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, সুযোগ এবং সম্ভাব্য অগ্রগতির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত উঠে আসবে, যা সদস্য দেশসমূহের রেগুলেটরি ও পলিসি প্রণয়নের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য তিনি বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানান।

পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথোরিটির সদস্য ও এসএটিআরসি ওয়ার্কশপ অন পলিসি, রেগুলেশন এন্ড সার্ভিসেস-এর সভাপতি ড. খাওয়ার সিদ্দিক খোকার বলেন, টেলিযোগাযোগ পরিষেবাগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এটি একটি দেশের জন্য অপরিহার্য। গ্রাহকের জন্য সুলভ ও সাশ্রয়ী ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিতের জন্য সকল অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। কর্মশালায় সকল অংশগ্রহণকারীদের পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় আমাদের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের টেলিযোগাযোগ খাতকে অনকেদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: এমদাদ উল বারী (অব.) বলেন, এই অঞ্চলের দেশসমূহ ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নত করা ও ভোক্তা সুরক্ষা জোরদারের পাশাপাশি ফাইভজি (5G), কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস এর মত প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। এসব পদক্ষেপগুলো বিচ্ছিন্নভাবে না নিয়ে একটি পারস্পরিক আঞ্চলিক সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্রহণ করা হলে তা জাতীয় অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।

তিনি বলেন, প্রতিবেশি অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও মোবাইল কাভারেজ সম্প্রসারণ, পরিষেবা ডিজিটালাইজেশন এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করেছে। এই কর্মশালায় একে অপরের চ্যালেঞ্জ এবং সাফল্য থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় ভবিষ্যতে একসাথে গতিপথ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিন দিনব্যাপী কর্মশালার প্রথম দিনের বিভিন্ন সেশনে ভবিষ্যত উদীয়মান প্রযুক্তির যুগে ফিক্সড এবং মোবাইল ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য ইউনিভার্সেল সার্ভিস রেগুলেশন তহবিলের যথাযথ ব্যবহার, ‍সুপারিশ, কৌশল ও প্রভাব এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য আইসিটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।

দ্বিতীয় দিনে ডিজিটাল গ্রাহকদের সুরক্ষা: অনলাইন স্ক্যাম এবং আর্থিক জালিয়াতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা; ভবিষ্যতের ট্যারিফ নীতিমালা গঠন: দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে কানভার্জেন্স এবং উদীয়মান টেলিযোগাযোগ/আইসিটি পরিষেবার প্রভাব বিশ্লেষণ ; স্মার্ট সিটি এবং সোসাইটি: আইওটি, বিগ ডেটা এবং অনুরূপ প্রযুক্তি স্থাপনে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলিতে অভিজ্ঞতা এবং কেস স্টাডিজ বিষয়ে বিভিন্ন সেশনে বিশেষজ্ঞগণ মতামত প্রদান করবেন।

তৃতীয় দিনে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে নেট নিরপেক্ষতা: চ্যালেঞ্জ, সুযোগ এবং নীতি নির্দেশনা; দক্ষিণ এশীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের আওতায় থাকা দেশগুলিতে ডিজিটাল রূপান্তর বিষয়ে আলোচনা হবে।

১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে সাউথ এশিয়ান টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কাউন্সিল (SATRC) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থা বেতার তরঙ্গ সমন্বয়, স্টান্ডার্ডাইজেশন, রেগুলেটরি প্রবণতা, টেলিযোগাযোগ খাত উন্নয়নের কৌশল এবং টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে কর্মকৌশল নির্ধারণ করে থাকে।

সদস্য দেশগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবছর এ কাউন্সিলের সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মশালা ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।

Related posts

বিটিসিএল নিয়ন্ত্রিত ৩টি ডোমেইন সার্ভারে ত্রুটি

Tahmina

আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে ২ টি গোল্ড সহ ১০ টি পদক অর্জন বাংলাদেশের

Tahmina

ওয়ালটন ডুয়াল ব্যান্ড রাউটার উদ্বোধন করলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান

Tahmina

Leave a Comment