টেকসিঁড়ি টিউটোরিয়ালঃ সাইবার জগতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন হুমকির উদ্ভব হচ্ছে। এর মধ্যে হানি ট্র্যাপ (Honeytrap) একটি শক্তিশালী কৌশল যা হ্যাকারদের ফাঁদে ফেলতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের জন্য একটি গোপন অস্ত্র হিসেবে কাজ করে, যা দিয়ে তারা আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করে তোলে।
হানি ট্র্যাপ কি?
হানি ট্র্যাপ হলো একটি ডিকয় (Decoy) বা ফাঁদ সিস্টেম, যা ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল বা আকর্ষণীয় টার্গেট হিসেবে তৈরি করা হয়। হ্যাকাররা যখন এই সিস্টেমে আক্রমণ করে, তখন তাদের কার্যকলাপ মনিটর করা হয় এবং তাদের পদ্ধতি, টুলস ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
হানি ট্র্যাপের প্রকারভেদ
১. হানিপট (Honeypot) – একটি আলাদা সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক যা হ্যাকারদের আকর্ষণ করে।
২. হানি নেট (Honeynet) – একাধিক হানিপটের সমন্বয়ে গঠিত একটি বড় নেটওয়ার্ক ফাঁদ।
৩. হানি টোকেন (Honey Token) – ডাটাবেজ বা সিস্টেমে রাখা একটি নকল তথ্য, যা চুরি হলে সতর্কতা সৃষ্টি করে।
হানি ট্র্যাপের সুবিধা
• হ্যাকারদের আক্রমণের পদ্ধতি বুঝতে সাহায্য করে।
• নতুন সাইবার হুমকি শনাক্ত করতে সহায়তা করে।
• নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা চিহ্নিত করে।
• হ্যাকারদের বিভ্রান্ত করে মূল সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখে।
হানি ট্র্যাপের ঝুঁকি
• যদি হানি ট্র্যাপ সঠিকভাবে কনফিগার না করা হয়, তাহলে এটি হ্যাকারদের জন্য একটি প্রবেশদ্বার হয়ে উঠতে পারে।
• এটি পরিচালনা করতে দক্ষ সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন।
উপসংহার
সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধে হানি ট্র্যাপ একটি কার্যকরী পদ্ধতি। এটি শুধু হ্যাকারদের ফাঁদে ফেলেই না, বরং ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। তবে, এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলেই কেবল এর সুফল পাওয়া সম্ভব।
সাইবার নিরাপত্তা জগতে হানি ট্র্যাপের ভূমিকা দিন দিন বাড়ছে, তাই এই প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা এবং বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্পাদনাঃ সামিউল হক সুমন, নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি – বাংলাদেশ