বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর দুনিয়ায় সাইবার সিকিউরিটি একটি অপরিহার্য দিক। প্রতিদিন আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করছি, অথচ জানি না কখন কোন হ্যাকার আমাদের তথ্য চুরি করে নেবে। এই জন্য প্রয়োজন একটি সুসংগঠিত সাইবার সিকিউরিটি রোডম্যাপ, যা অনুসরণ করে একজন ব্যক্তি নিজেকে দক্ষ সাইবার নিরাপত্তা পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
নীচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো ২০২৫ সালের জন্য একটি পরিপূর্ণ সাইবার সিকিউরিটি রোডম্যাপ:
১.সাইবার সিকিউরিটির পরিচিতি (Intro to Cyber Security)
প্রথম ধাপ হলো সাইবার সিকিউরিটির মূল ধারণা সম্পর্কে জানা।
এখানে আপনি শিখবেন:
– Malware (ম্যালওয়্যার)
– Phishing (ফিশিং অ্যাটাক)
– Password Attacks (পাসওয়ার্ড হ্যাকিং)
এই ধাপে আপনি বুঝতে পারবেন কেন এবং কীভাবে সাইবার অপরাধ সংঘটিত হয়।
২. অপারেটিং সিস্টেম (Operating Systems)
সাইবার সিকিউরিটির কাজ করতে হলে অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
আপনাকে জানতে হবে:
– Windows
– Linux
– MacOS
বিশেষ করে লিনাক্স সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. নেটওয়ার্কিং (Networking)
সাইবার সিকিউরিটির অন্যতম ভিত্তি হলো নেটওয়ার্কিং।
আপনাকে জানতে হবে:
– IP Address
– MAC Address
– OSI Model (Networking Model এর স্তরসমূহ)
নেটওয়ার্ক বুঝতে পারলে, আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কোথা থেকে অ্যাটাক হচ্ছে।

৪. প্রোটোকল (Protocols)
এখানে আপনি ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কের মৌলিক নিয়ম-কানুন শিখবেন।
প্রধান বিষয়:
– TCP/IP
– Routing
– Data Transmission Rules
৫. প্রোগ্রামিং (Programming)
সাইবার সিকিউরিটিতে কোডিং অপরিহার্য।
শিখুন:
– C/C++
– Python
– Java
বিশেষ করে পাইথন ব্যবহার করা হয় অটোমেটেড স্ক্যানিং, এনালাইসিস ও সিকিউরিটি টুলস তৈরিতে।
৬. ডাটাবেস (Database)
সাইবার অপরাধীরা প্রায়ই ডাটাবেসে ঢোকার চেষ্টা করে। তাই আপনাকেও জানতে হবে কীভাবে ডাটাবেস কাজ করে।
দেখে নিতে হবে:
– MySQL
– MongoDB
এসকিউএল ইনজেকশন থেকে ডেটা প্রোটেকশন—সবই এ পর্যায়ে শেখা হয়।
৭. PEH – Practical Ethical Hacking
এটি হলো হ্যাকিংয়ের বাস্তব দিক। আপনি শিখবেন কীভাবে হ্যাকারদের মতো চিন্তা করে সিস্টেমের দুর্বলতা বের করতে হয় (Ethical Hacker হিসেবে)।
৮.সিকিউরিটি অ্যাপ্রোচ (Security Approaches)
এখানে আপনি শিখবেন:
– Firewall Configuration
– Vulnerability Assessment
– Cryptography
– Penetration Testing
এই ধাপেই আসল “সুরক্ষা” শুরু হয়।
৯. সাইবার সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট (Cyber Security Architect)
সবকিছু শেখার পর, আপনি নিজেই হয়ে উঠবেন একজন প্রফেশনাল সাইবার সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট। এই পর্যায়ে আপনি বড় প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নীতি গঠন ও বাস্তবায়নে অংশ নেবেন।
সবশেষ
সাইবার সিকিউরিটি শেখা এখন সময়ের দাবী। উপরের রোডম্যাপটি অনুসরণ করে আপনি নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন একজন দক্ষ এবং সার্থক সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট হিসেবে। আপনি যদি এই পথে পা বাড়াতে চান, তবে আজই শুরু করুন!
সম্পাদনাঃ সামিউল হক সুমন, নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি – বাংলাদেশ